
বুধবার, ১১ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » খেলাধুলা | নির্বাচিত বিভাগ | সর্বশেষ সংবাদ » ‘বিশ্বকাপ’ ফিরুক মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে
‘বিশ্বকাপ’ ফিরুক মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে
‘সাঙ্গাকারা যদি টানা চারটি সেঞ্চুরি করতে পারে, তবে মাহমুদউল্লাহ কেন নয়?’ —বিশ্বকাপে পর পর দুই সেঞ্চুরির পর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বড় গর্ব করেই বলেছিলেন সাকিব আল হাসান।
মাহমুদউল্লাহর স্বপ্নযাত্রা অবশ্য এর পর খুব একটা দীর্ঘ হয়নি। তবে বিশ্বকাপে যা করেছিলেন, তাতেই নাম উঠে গিয়েছিল ইতিহাসের পাতায়। ১১৩ ওয়ানডেতেও যাঁর নামের পাশে ছিল না একটি সেঞ্চুরি, সেই মাহমুদউল্লাহ বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে ছুঁলেন তিন অঙ্ক। বিশ্বকাপে টানা দুই সেঞ্চুরির কীর্তিতে নাম লেখালেন এবি ডি ভিলিয়ার্স, রাহুল দ্রাবিড়, ম্যাথু হেইডেন, রিকি পন্টিং, সাঈদ আনোয়ার, মার্ক ওয়াহদের পাশেও।
বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজগুলোতে যেখানে বাংলাদেশ রচনা করছে একের পর এক সাফল্যগাথা, সেখানে মাহমুদউল্লাহ আশ্চর্য নিষ্প্রভ। এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে রান ২৬। আউটের ধরনও ছিল বেশ দৃষ্টিকটু—তিন ম্যাচেই পরিষ্কার বোল্ড!
চোটের কারণে খেলতে পারেননি জুনে ভারত সিরিজ। তবে জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে খানিকটা জ্বলে ওঠার ইঙ্গিত মিলেছিল। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ডাক মারলেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে করেছিলেন ফিফটি। সিরিজের শেষ ম্যাচে অবশ্য তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকারের বীরত্বে ব্যাটিংয়েই নামতে হয়নি।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুটি ওয়ানডেতে হাসেনি ব্যাট। দুই ম্যাচে রান ১৩। স্বপ্নের মতো বিশ্বকাপ কাটিয়ে আসা মাহমুদল্লাহকে ঠিক খুঁজে পাওয়া গেল না গত আট মাসে ঘরের মাঠে খেলা ৭ ওয়ানডেতে।
একটা সময় ব্যাটিং অর্ডারে একটু নিচে নামতেন বলে বড় ইনিংস খেলার সুযোগ মিলত কমই। তবে গত বছর নভেম্বরে জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকেই নিয়মিত খেলছেন তিনে কিংবা চারে। তাতে ফলও মিলেছে। গত ২৮ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে খেলেছিলেন অপরাজিত ৮২ রানের ইনিংস। এর পরের ছয়টি ইনিংস ছিল—৫১ *, ২৩, ২৮,৬২, ১০৩,১২৮ *। এর মধ্যে শেষ তিনটি ইনিংস খেলেছিলেন বিশ্বকাপে।
আজকের ওয়ানডের আগ পর্যন্ত এ বছর ১৪ ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর রান ৩৭.৮৩ গড়ে ৪৫৪। এর মধ্যে ২৯১ এসেছে বিশ্বকাপে পরপর তিন ম্যাচে। বাকি ১০ ম্যাচে রান ১৬১। বিশ্বকাপে এতটাই ভালো খেলেছিলেন, ফল পাচ্ছেন এখনো। এ বছর রানসংগ্রহে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মাহমুদউল্লাহর অবস্থান চারে।
যেহেতু ব্যাটিং অর্ডারে তিন-চারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নামছেন, কিন্তু দ্রুত আউট হয়ে যাওয়াতে দল পড়ে যাচ্ছে চাপে। তবে মাহমুদউল্লাহর ফর্ম যা-ই হোক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার পূর্ণ আস্থা রয়েছে তাঁর ওপর।
শিগগির ঘুরে দাঁড়াবেন দলের অন্যতম ব্যাটিং ভরসা, এ প্রত্যাশা বাংলাদেশ অধিনায়কের, ‘রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) বিশ্বকাপে তিন-চার-দুই জায়গাতেই সেঞ্চুরি করেছে। আমাদের কোচ বিশ্বাস করেন, ব্যাটিং অর্ডার শুধুই একটি সংখ্যা। আত্মবিশ্বাস থাকলে যেকোনো জায়গাতে নেমেই শট খেলা যায়। রিয়াদের সহজাত খেলাই হলো, একটু সময় নিয়ে পরে পুষিয়ে দেওয়া। দুটি ম্যাচে পারেনি, সামনে সময় আছে। এ সিরিজের আগে (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) ওর ফিফটি ছিল। আমার বিশ্বাস, ও ঘুরে দাঁড়াবে।’
অধিনায়কের কথায় প্রেরণা খুঁজতেই পারেন মাহমুদউল্লাহ। তবে আরও একটি জিনিস হয়তো তাতিয়ে দিতে পারে তাঁকে। টেস্ট-ওয়ানডেতে মাহমুদউল্লাহর তিন সেঞ্চুরি প্রতিটি পেয়েছেন দেশের বাইরে। এর মধ্যে দুটি নিউজিল্যান্ডে, একটি অস্ট্রেলিয়ায়।
দেশের মাটিতে প্রথম তিন অঙ্ক ছোঁয়ার এই তো সুযোগ!